লাল চা এবং আজাদ
নদীর ধারে
নন্দীর চায়ের দোকান।
একটা লাল চা দে তো-
লালচে কালো রংয়ে
জীবনের সব কিছু যেন
যায় হারিয়ে।
চা দে- জলদি
আরে হারামখোর,
বাসে
যামু;
কৈ রে আজাদ.........
থমকে যায় আজাদ!!
আজাদ পাকিস্তান,
আজাদ
কাশ্মীর
তারপর.....
বিস্মৃতির গহ্বরে হারিয়ে যায় সাইজুদ্দি-
সাদা চামড়া খ্যাদাও
লড়কে লেঙে পাকিস্তান
কাশ্মির,
আজাদ
না জম্মু-
লাল সাদা উড়োজাহাজের দৌড়
সেকি উদ্দাম!
আবার থমকে যেতে হয়-
বায়ান্নোর রক্ত
কেনো ঝরেছিল?
শুনেছিল
বাংলা ভাষা,
তারপর-
উনসত্তর,
মতিউর-
সেই বাচ্চা পোলাডা মরলো
বইন্যার কথাও মনে হয়...
স্মৃতি ডুব দেয় আরো গহীন জলে।
সত্তর একাত্তর
দুইটা মাস- একষট্টি দিন
যেন একষট্টি বছর, সাথে যোগ হয়
আরো পঁচিশ যুগ,
পঁচিশ
শতাব্দি....
কইরে,
হালার
আজাদ না অজাদ
লাল চা দিলি না?
ক্রদ্ধ হয়ে ওঠে সাইজউদ্দি
ক্ষেতে যামু,
ধান
কাটুম,
ঘাম ঝরবো
তবু আমার ধান পামু না।
রাজাকারের বাচ্চা মহাজন....
- বিরবির
করে।
একদিন রাইতে
বুকের মধ্যিখানে বউটারে কাইড়া নিল
ছেড়া কাথা গরম করতে
ফিরা আর আসে নাই শাফিয়া;
দেশে শীত কেবল বাড়তেই আছে
শাফিয়া নাই-
কম্বলও জোটে না,
যদিবা
আট কোটি...
হুনছিলো মাইনষের কাছে।
খড়া, বর্ষা
আর বন্যা
সাইজুদ্দি বাইচা আছে, থাকবে
হয়তো থাকবে না; কিন্তু
ঘড়ির কাটা চলবে
লাল চা-ও বেচবে আজাদ।
খুলনা
২৬ জানুয়ারি ১৯৮৬ খৃষ্টাব্দ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন