শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

নতুন করে ভাবতে হবে

নতুন করে ভাবতে হবে

নুরুল্লাহ মাসুম

তৃতীয় পর্ব 

বেগম খালেদা জিয়া প্রধান মন্ত্রীত্বের সাথে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদটিও হাতে রেখেছিলেন তারপরও তিনি যা করেন, 'সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ' নামে একটি বিভাগ চালু করেন, যেটি মূলত রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির শাসনামলে চালু ছিল সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিণীর সর্বাধিনায়ক থেকেই গেলেন বলা যেতে পারে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাষ্ট্রপতির আচরণ করে গেছেন পুরো সময়টাতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সে সময়ের মতই খালেদার আমলে সংসদ সার্বভৌম হলেও কখনোই মন্ত্রিপরিষদ সংসদের কাছে দায় বদ্ধ হয়ে ওঠেনি পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও একই ধারা চলতে থাকে
১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা চালু হলেও সংসদ কখনোই ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠেনি
১৯৯০ সালে নবপর্যায়ে বাংলাদেশ সংসদীয় পদ্ধতির সরকার পেল- এটা ঠিক তবে সংসদ কতটা সার্বভৌম এবং কার্যকর হয়েছে তা বিতর্কের বিষয় আন্তৰরাষ্ট্র চুক্তিসহ সকল বিষয়ে সংসদের অনুমতি প্রয়োজন আমাদের প্রধান মন্ত্রীগণ সংসদকে কতটা সম্মান দেখিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে বহু আন্তদেশীয় চুক্তি হয়েছে যা কখনোই সংসদে পেশ করা হয়নি আবার অসম্ভব দ্রুত সময়ে সংসদে বিল পাশ হয়েছে- এমন নজিরও আছে তবে মন্দের ভাল আওয়ামী লীগ সরকার সংসদয় কমিটির সভাপতির পদে  সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে অন্য সংসদ সদস্যকে সভাপতি করে একটা ভাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নিঃসন্দেহে সংসদীয় কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে কথা বলার অবকাশ রয়েছে এখনও সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্ত্ম কেবলই নির্দেশনা মূলক হয়ে থাকলে সংসদের ক্ষমতার হ্রাস করা হয় কি না, তাও ভেবে দেখা দরকার অবশ্য ৯০ পরবর্তী সংসদগুলোয় আমাদের অভিজ্ঞতা ভাল নয় বিরোধী দলের ক্রমাগত সংসদ বর্জন এবং ক্ষমতাসীনদের একগুয়েমির কারণে সত্যিকার অর্থে সংসদ কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে সেটা গবেষণার বিষয় বটে তত্ত্ববধায়ক সরকার দাবী নিয়ে প্রথমে আওয়ামী লীগের আন্দোলন, পরে বিএনপি'র একক নির্বাচন অনুষ্ঠান- সব মিলিয়ে আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র নিঃষ্কণ্টক পথ চলতে পারেনি এ ধারা চলে আসছে ৯০ সালে সরকার পদ্ধতি পরিবর্তনের পর থেকেই। 
(চলবে)