জলোচ্ছাস এবং আসমানী
নুরুল্লাহ মাসুম
হুসফিরা আসতি আসমানী, তরেই খোঁজলাম
ডাইনে-বামে, এদিক-সেদিক
কোনহানে পাইলাম
না।
রাইতের কালে
হুইছিলাম
একলগে- এক
বিছানায়, আর মনে নাই-
হাচাই কই আসমানী, আর মনে নাই।
ক্যাদা মাটি আর
পাশে আছে কত্ত
মরা গরু-ছাগল
পেটফুলা বহুত
মানুষ দেখলাম
কিন্তুক- তরে
পাইলাম না।
চোখটা ঝাপসা লাইগলো
চলি গেইলাম
হপ্পনের রাজ্যি-
য্যান- হাচাই
হেই দিন!
বিয়ান বেলা উডি
মেলায় যাবার
কথা আছিল-
তোর লাগি আলতা
আর
ঠোট মালিস আনুম-
কথা দিছিলাম।
ঠোটে লাগাবি, আদর করুম,
গাল লাল হইব-
সব কথা কওনও
যায় না,
তরে খুজিও পাই
না।
আগামীর কথা ভাবি
আদর করি তরে, ঘুমাইলাম-
বড় শান্তর ঘুম-
য্যান বেহেস্তের
চির শান্তি।
মট্ মটাস্ শব্দে
ঘুম ভাঙ্গি গেল, মনে অইল
পানিতে ভাসতাছি-
তুই আমি- পাশাপাশি।
আন্ধার চারদিক, খালি দেহা যায়
ধলা পানির মুকুট-
য্যান তুফান
দৈত্যের রাজা আসতিছে,
তুই জড়াইয়া
ধরলি মোরে;
সাতার কাইট্তাছি-
কাইট্তাছি
তুফানের
ধাক্কায় জোর কমি গেল
বিষ্টির ঝাপ
আরেক জ্বালা-
শীত করতি লাইগল।
খানিক বাদে-
কত মাইনষের চিৎকাইর
কে কারে বাচাইব, নিজে ব্যস্ত
যেমনি অইল নিজের
বেলায়।
তর কতা হুনলাম, পেরেশান-
সাতার কাটতি
পারস না
কি করুম ক’ আমি কাহিল-
কেমনে ধরি রাহি!
গর- গর- গরম! বাজ
পইড়ল
তুফান দৈত্যি
ছুটি আইসলো
গুড়ি একখান
পাইলাম হাতে-
তুই নাই, গুড়ি ছুটি গেল।
কত বাচাও বাচাও
হুনলাম-
ছুটি গেলাম, আসমানী কই
খুজতি লাগলাম
অথৈই পানির মদ্যি।
মহাজন হিকদার আর
দারোগা বাড়ী
বড় দালান গুলান
য্যান
লাল চর, নতুন চর, কুককির চর
দেখতে ভালাই
লাইগল।
লাল ভেজা কাপড়
মাথায়,
এই আসমানী-
হায়! কতা কইল
না
গেলাম আরেক চরে।
কত সাতরাইলাম
জানি না তুই
কুনডে আছিলি,
হায় আসমানি!
কোথায় গেলি- ঠোট
মালিস পরলি না!
সাহেবেরা আইলো, মোরে তুলি লইল
কত আদর যতœ কইরল-
ট্যাকা দিল,
তরে পাইলাম না।
আসমানী- আসমানীরে,
কোনডে গেলি-
সমুদ্দুরে চরে
ফেলাই মোরে
ওরে আসমানী!
ওরে আসমানী!