শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১৬

নতুন করে ভাবতে হবে: পর্ব-২৪

পর্ব-২৪


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গভর্নর ড. আতিউর রহমানের স্বদর্প পদত্যাগ, দুজন ডেপুটি গভর্নরের অব্যাহতি এবং ব্যাংকিং বিভাগের সচিবকে ওএসডি করা- সবই পুরানো খবরইতোমধ্যে নতুন গভর্নর নিয়োগ হয়ে গেছেআজই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেনঘটনার দৃশ্যপটে অনেক কিছু এসেছে, তবে বেশীরভাই আসেনিআমরা সবটুকু হয়ত কোনকালেই জানতে পারব নাকিছু কিছু বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে চির-কালবিদায়ী গভর্নর বলেছেন, তার এ বিদায় বীরের বেশে, মাথা উঁচু করে’- অবাক হতে হয় তার এ বক্তব্যে! কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেব তিনি ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন, তা বীরের বেশেহয় কি করে? তিনি পদত্যাগ-পত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে; এটাও এক বিষ্ময়! তিনি কি এটা করতে পারনে? প্রধানমন্ত্রীই বা তা গ্রহণ করেন কেন? প্রথমত অর্থ চুরির ঘটনা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে না জানানো একটা অপরাধ; অবশ্য তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন, জানালে কি লাভ হত? দারুন কথা বলেছেন তিনি! দ্বিতীয়ত তিনি এমন দুঃসময়ে বিদেশ সফরে গেলেন, যদিও তিনি বলছেন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে জানিয়ে গেছেনবুঝলাম তিনি অনুমতি নিয়ে গেছেন; তবে যাবার আগে তাদের এ বিষয়ে অন্ধকারে রেখে গেলেন কেন? এর পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল কি? পদত্যাগের পর সাংবাদিক সম্মেলনে তার দেয়া বক্তব্যে এটা পরিষ্কার হয়েছে অর্থমন্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক ভাল ছিল না বা তিনি অর্থমন্ত্রীকে ডিঙ্গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করতেনপ্রাকারন্তরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সখ্যতার কথাও বলেছেনতিনি অর্থমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাকে যুবকের মত ভাববার পরামর্শও দিয়েছেন- এটা কি এক ধরণের ধৃষ্টতা নয়গভর্নরের নিয়োগ আসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে, এবং সকল প্রকার নিয়োগ হয় রাষ্ট্রপতির পক্ষে, পদত্যাগপত্রটাও সেখানেই যাওয়া উচিত ছিল না? ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেমনই থাক না কেন, একজন শিক্ষক হিসেবে ড. আতিউর রহমান কি এ বিষয়ে অবগত নন? তিনি কি পারে নিয়ম ভাঙ্গতে! সফল রাজনৈতিক নেতার মত আবেগময় বক্তব্য দিয়ে তিনি যেভাবে বীরের মতবিদায় নিলেন, তাতে প্রশ্ন জাগে- এমনটি কি আগামীতেও দেখতে হবে বাংলার সাধারণ জনতাকে?


১৮-০৩-২০১৬