বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

নতুন করে ভাবতে হবে

নতুন করে ভাবতে হবে

নুরুল্লাহ মাসুম

পঞ্চম পর্ব

আওয়ামী লীগ উপজেলা পদ্ধতি বাস্তবায়নের কথা বললেও আজো তা বাস্তবায়ন করেনি অথচ, আমার মনে হয় শক্তিশালী উপজেলা/জেলা পরিষদ বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের মানুষের রাজধানীমূখী হওয়ার প্রবণতা কমে যেত রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমত, আর্থিকভাবে দেশ লাভবান হত এখনও দেশে উপজেলা পরিষদ রয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের ক্ষমতার টানাপোড়নে বহু এলাকার উন্নয়ন কার্য ব্যহত হচ্ছে- এমন সংবাদ প্রতিনিয়ত সংবাদপত্রে দেখা যায় সংসদ সদস্যগণ যদি কেবল আইন প্রণয়ন নিয়েই থাকতেন এবং স্থানীয় সরকারকে স্থানীয় উন্নয়ন কাজ করতে দিতেন নির্বিঘ্নে, তাহলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হত সংসদ সদস্যগণ অবশ্য বলবেন, এলাকার উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত না থাকলে আবারো জনতার কাছে কি নিয়ে যাবেন ভোট চাইতে? খাটি সত্য কথা তবে সংসদ সদস্যগণ যদি তাঁদের মূল কাজ- আইন প্রণয়ন বাদ দিয়ে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত্ম থাকেন; তবে সংসদে এমন আইন পাশ হবে যা কিনা আমলাদের তৈরী করা- যা কখনও কখনও নিজের দল ও দেশের স্বার্থে পরিপন্থী হতে পারে অথবা হতে পারে অসম্পূর্ণ এক আইন গত ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ের পর দেখা গেল আইনটি সম্পূর্ণ নয় এবং সে কারণেই সুষ্টি হল গণজাগরণ মঞ্চ- নতুন আইন করার দাবী নিয়ে আইনটি সংশোধিতও হল আমার তো মনে হয়, সংসদ সদস্যগণ আইনটি পাশ করার আগে ভাল করে দেখলে এত অল্প ব্যবধানে আইনটি সংশোধন করার দরকার হত না; সৃষ্টি হত না গণজাগরণ মঞ্চের এসবই আমাদের সাদা চোখে দেখা বিষয়; এর অন্ত্মর্নিহিত অন্য কোন বিষয় আছে কিনা, তা আমাদের জানা নেই

১৯৭২ সালের সংবিধানে সংসদে সমাজে অনগ্রসর গোষ্ঠী হিসেবে নারীদের জন্য ১০টি সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছিল পরে তা বাড়িয়ে ১৫, ৩০ এবং সবশেষে ৫০টিতে উন্নীত করা হয় বর্তমানে দেশের প্রধান প্রধান সবগুলো পদে আসীন নারীরা পুরুষদের সাথে সরাসরি নির্বাচন করে বহু নারী সংসদে স্থান করে নিয়েছেন এখন কি নারীদের জন্য আর সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজন আছে? আমি মনে করি - প্রয়োজন নেই বরং এই ৫০টি আসন সংরক্ষণ করা দরকার সংখ্যানুপাতে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর জন্য বর্তমানে সংসদে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বন্টন করা হয় যেহেতু আসনগুলো সাংবিধানিকভাবে নারীদের জন্য, তাই সেখানে পুরম্নষদের মনোনীত করার সুযোগ নেই আমি মনে করি ৫০টি সংরক্ষিত আসন ঠিক রেখে সেগুলোয় যদি নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর সারা দেশে প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার হিসেব করে বন্টনের সুযোগ দেয়া হয়, তাতে দলগুলো যেমন লাভবান হবে; তেমনি দেশও উপকৃত হবে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক: বর্তমান নিয়মে ৩০০ আসনে নির্বাচন হলো আসন ভিত্তিতে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা জয় লাভ করলেন যেহেতু সারা দেশের সবগুলো আসনের ভোটা সংখ্যা সমান নয়, সেহেতু কোন আসনের পরাজিত ব্যক্তির চেয়ে কম ভোট পেয়েও অন্য আসনের এক প্রার্থী নির্বাচিত বলে ঘোষিত হতে পারে তুল্যমান উদাহরণ- একসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাশ করতে হলে ৪৫০ নম্বর পেতে হত; সেই সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাশের জন্য প্রয়োজন ছল ৪০০ নম্বর ফলটা হলো এমন, ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে কোন ছাত্র ৪৪৯ নম্বর পেয়ে পেল তৃতীয় শ্রেণী, অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪০১ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় বিভাগ বা শ্রেণী সংসদ নির্বাচনেও এমন ঘটনা ঘটছে
(চলবে)