শুক্রবার, ১৬ মে, ২০১৪

নতুন করে ভাবতে হবে - সপ্তদশ পর্ব

সপ্তদশ পর্ব 


সংসদে না থাকলেও দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রধান স¤প্রতি এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিলুপ্তি দাবী করার পর থেকে এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক চলছে প্রতিনিয়তমনে রাখতে হবে র‌্যাব নামক বিশেষ এই বাহিনীর সৃষ্টি হয়েছিল সে সময়ের প্রধান-মন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাতেইএমনকি তিনিই র‌্যাবকে দিয়ে অপারেশন ক্লিন হার্ট করিয়ে এবং র‌্যাবকে দায়মুক্তি দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেনর‌্যাব কি? এ প্রশ্নের উত্তরে সকলেই বলবেন, এটি একটি বিশেষ বাহিনী; যাকে এলিট ফোর্স বলা হয়র‌্যাবের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্যানুসারে র‌্যাবের মিশন বা লক্ষ্য হচ্ছে: সন্ত্রাস দমন ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা এবং ওই ওয়েবে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস শিরোনামে বলা হয়েছে: বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি উন্নয়-নশীল দেশআমাদের উন্নতির পথে যে সকল বাধা বিপত্তি রয়েছে তার মধ্যে, অস্থিতিশীল আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অন্যতমএ রকম একটি পরিস্থিতিতে যখন সমাজের প্রত্যেকটা মানুষ অনি-শ্চিয়তার মাঝে ভুগছিল, তখন পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষে্য যে সরকার একটি এলিট ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করেক্রমান্বয়ে সভা-সমন্ব, আলোচনা ও গবেষণার পর সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন সংক্ষেপে র‌্যাব ফোর্সেস নামে একটি এলিট ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনগত ২৬ মার্চ ২০০৪ তারিখে জাতীয় স্বধীনতা দিবস প্যারেডে অংশ গ্রহনের মাধ্যমে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জনসাধারনের সামনে আত্ম প্রকাশ করেজন্মের পরপরই এই ফোর্সের ব্যাটালিয়ন সমূহ সাংগঠনিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত থাকে এবং স্ব স্ব এলাকা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ শুরু করেএর মাঝে প্রথম অপারেশনাল দায়িত্ব পায় ১৪ এপ্রিল ২০০৪ তারিখে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান রমনা বটমূলে নিরাপত্তা বিধান করার জন্যএরপর আবার র‌্যাব মূলত তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলগত ২১ জুন ২০০৪ সাল থেকে র‌্যাব ফোর্সেস পূর্ণাঙ্গভাবে অপারে-শনাল কার্যক্রম শুরু করে
দি আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ানস অর্ডিনসন্স ১৯৭৯ সংশোধন করে ২০০৩ সালে জারি করা দি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানস (অ্যামেন্ড-মেন্ট) অ্যাক্ট-২০০৩ অনুসারে র‌্যাব ফোর্সেস প্রতিষ্ঠা করা হয়আইন অনুসারে এই বাহিনী করা হলেও সাধারণভাবে বা সাদা চোখে এই বাহিনী একটি খিচুরি বাহিনী হয়ে আছেআইন অনুসারে এই বাহিনীর কমান্ড করবে পুলিশের একজন অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শকতাঁর অধীনে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসার এমনকি কোস্টগার্ড থেকেও সদস্য নেয়ার বিধান রাখা হয়সশস্ত্র বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন, বাকী সবগুলো ¯^রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনসশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অপরাধে সামরিক আইন রয়েছের‌্যাবে কর্মকালীন অপরাধে সেই সামরিক সদস্যের বিচার সামরিক আইনে হওয়ার কতটা সুযোগ রয়েছে, সেটা কি আইন প্রণয়নের সময় ভেবে দেখা হয়নি? মনে রাখতে হবে সামরিক বাহিনীর গোপনীয়তা বিশ্বজনীন; সেখানে বেসামরিক আইন প্রয়োগের সুযোগ নেইতবে সেই সামরিক সদস্যকে দিয়ে কেন বেসামরিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হলো  সে বা তারা সেখানেই যদি কোন অপরাধ করে, তাদের বিচার কেন গোপনে হবে। আমি মনে করি র‌্যাবের গঠণ প্রক্রি-য়াতেই ভুল ছিল; যা এখন সংশোধ করার সময় এসেছেদু-চার জন র‌্যাব সদস্যের অপরাধের জন্য পুরো বাহিনী বিলুপ্ত করার কোন যুক্তি নেইতবে এ বিষয়েও সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, র‌্যাব যেহেতু পুলিশের একটি বিশেষ ব্যাটালিয়ান, সেহেতু র‌্যাবে কর্মরত সকলকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকেই কাজি করতে হবে এবং এই বাহিনীর সদস্যরা অপরাধ করলে বা অপরাধে যুক্ত হলে সকলের জন্য একই আইন প্রয়োগ করতে হবেএবিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে সম্মান করার মত সাহস ও দক্ষতা দেখাতে হবে সরকারকে