বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৭

পুরানখ্যাত করতোয়া তীরে- প্রথম পর্ব

পুরানখ্যাত করতোয়া তীরে- প্রথম পর্ব

নুরুল্লাহ মাসুম



সাহিত্যাঙ্গন বাংলাদেশ ও অ্যাসোসিয়েশন ফর সাউথ এশিয়ান কালচার অ্যান্ড লিটারেচার এর সভাপতি সমাজসেবী সৈয়দা রুখসানা জামান শানুর আমন্ত্রণে হঠাৎ করেই ঢাকা থেকে বাইরে যাবার একটা সুযোগ এলো। ১০ থেকে ১২ এপ্রিল রংপুর জেলার পীরগঞ্জে অনুষ্ঠিত দক্ষিন এশিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ১০ তারিখ গভীর রাতে যাত্রা শুরু- আরামদায়ক বাসে। এর আগে রংপুর একটিবার গিয়েছিলাম, ট্রানজিট যাত্রী হিসেবে; সে অনেক আগের কথা বিগত শতকের নব্বইয়ের দশেকর কোনো এক সময়ে। পীরগঞ্জের খ্যাতি মূলত পরমানু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কারণে। তাঁর এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় পৈত্রিক সূত্রে পীরগঞ্জের নাগরিক। জেনেছিলাম, আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপার ও ভুটান থেকে কবি-সাহিত্যিকগণ যোগ দেবেন; তাই আগ্রহটা একটু বেশীই ছিলো। পেশাগত কারণে সাধারণত সহজে ঢাকার বাইরে যাওয়া হয়ে ওঠে না। দুই দিনের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা ছাড়লাম।
ভোরের আলো ফুটতে ফুটতে পৌঁছে গেলাম বগুড়ার শেরপুরে। এরপর চোখ মুদে থাকার ফুসরৎ নেই। অবিরাম সবুজের মাঝ দিয়ে কালো পিচঢালা মহাসড়ক। মাঠে সবুজের সমারোহ- ধান আর ভুট্টার ক্ষেত দুচোখ জুড়িয়ে দিলো। চৈত্রের শেষে এসেও দেখলাম দিগন্তে কুয়াশার আস্তরণ। এটা আসে বলেই তো এটা উত্তরবঙ্গ।
রবির দেখা মিলতেই পৌঁছে গেলাম আমার গন্তব্যে- পীরগঞ্জ। বাসস্ট্যান্ডে নেমেই এককাপ গরম চায়ে গলাটা ভিজিয়ে নিলাম- দোকানী জানতে চাইলো আমার আগমনের হেতু। বুঝলাম, এরা জানে এখানে একটা বড় কিছু হচ্ছে। তার কাছেই শুনলাম বিদেশী কয়েকজন অতিথি ইতোমেধ্য পৌঁছে গেছেন।
বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। এরই মধ্যে কথা হয়েছে আয়োজনের সভাপতি রুখসানা জামান শানুর সাথে। আমায় অভ্যর্থনা জানাতে এলেন আয়োজনের মূল ব্যক্তি অ্যাসোসিয়েশন ফর সাউথ এশিয়ান কালচার অ্যান্ড লিটারেচার-এর সাধাররণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ সোনা। তিনি স্থানীয় ব্র্যাক রেস্ট হাউসে পৌঁছে দিয়ে আমাকে বিশ্রাম নিতে বলে চলে গেলেন। কত কাজ তার। খানিকটা বিশ্রাম নেবার সুযোগ পেয়ে বিছানায় গড়িয়ে নিলাম।


বেলা ১১টা দিকে আয়োজনস্থেল নেয়ার জন্য স্থানীয় এক সংবাদকর্মীকে পাঠানো হলো। দুঃখিত, তার নামটা মনে রাখতে পারি নি। যন্ত্রচালিত রিক্সা যোগে পৌঁছে গেলাম আয়োজনস্থল বয়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে। রাস্তার দুধারে সারিবদ্ধ স্কুল ছাত্ররা, ফুল দিয়ে আগত অতিথিদের বরণ করে নিচ্ছে। আমি বোধকরি একটু বিলম্বে এলাম। তদুপরি সকলের সাথেই মিছিলে যোগ দিতে পেরেছি ভেবে ভাল লাগলো। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার ধরে স্কুলের ছাত্র-ছাদ্রীদের পুষ্পবৃষ্টি অতিক্রম করে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছানো গেল। স্কুল মাঠে বিশাল আকারের প্যান্ডেল। দর্শক সারিতে স্থান নেয়ার আগে কুশল বিনিময় হলো ঢাকা থেকে আগত ভাষা সৈনিক ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, কবি মো. নূরুল হুদা ভাইয়ের সাথে। এখানেই দেখা মিললো আয়োজক কমিটির সভাপতি কবি রুখসানা শানুর সাথে। কথা হলো বয়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক খোকন-এর সাথে; আয়োজকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। অতিথিদের আগমনের স্বল্প সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়। যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক আয়োজন, সঞ্চালনা করা হয় বাংলা ও ইংরেজী- দুই ভাষায়। শুরুতেই আগত অতিথিদের পুষ্পমাল্যে বরণ করে নেয়া হয় এবং সকলকে লাল-সবুজ উত্তরীয় পড়িয়ে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের ধারা বর্ণনা দেয়া আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়, তাই এবিষয়ে বেশী কিছু লিখছি না।
অনুষ্ঠানের মাঝে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে সমস্য দেখা দিলেও একে অপরের সাথে যোগাযোগের সুযোগটা বাড়ে। পরিচিত হই ভারত থেকে আগত কবিদের সাথে। এদের মধ্যে ছিলেন- ভারতের উত্তর দিনাজপুরের কবি, সম্পাদক ও সমাজকর্মী সুশান্ত নন্দী, ত্রিপুরার স্রোত সম্পাদক গোবিন্দ ধর, মেঘালয়ের কবি ফাল্গুনী চক্রবর্তী। নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে যাদের আসার কতা ছিল, তারা ভিসা জটিলতার কারণে যথাসময়ে পৌঁছাতে পারেন নি বলে জেনেছি। অনুষ্ঠানে অতিথি-বরণ, বক্তব্য, আবৃত্তি, সম্মননা প্রদান ইত্যাকার কার্যক্রমের মধ্যে স্কুলের ছেলে-মেয়েরা পরিবেশন করে সংগীত। সব মিলিয়ে সুন্দর একটা সময় কাটে সেথায়।


দুপুরের পরে আহার পর্ব। এটা অবশ্য একসাথে হয়ে ওঠেনি। আহারের আগেই অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন রংপুরের অন্যতম সরকারী আইনজীবী রফিক হাসনাইন। স্কাউটিং-এর সুবাদে তার সাথে অনেক আগেই পরিচিতি ও সখ্যতা। আমি পীরগঞ্জে যাবো, রংপুরে একটিবার যাবো না- এমনটি তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই আদালতে হাজিরা দিয়েই চলে আসেন পীরগঞ্জে, উদ্দেশ্য আমায় রংপুর নিয়ে যাওয়া। আয়োজকদের সাথে কথা বলে এবং অনুমতি নিয়ে সন্ধ্যায় রংপুর যাবার সিদ্ধান্ত নেয় হলো। এরই মধ্যে যোগাযোগ ঘটে রংপুরের প্রাক্তন জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সোবাহানের সাথে। তিনি বাসায় আপ্যায়ন না করে ছাড়বেন না; অগত্যা যেতেই হলো। বিকেলের সুন্দর একটা সময় কাটলো তার বাসায়। সেখানে বেশ খোলামেলা আলোচনা হলো ত্রিপুরার কবি ও সম্পাদক গোবিন্দ ধর ও অন্য একজন নবীন কবির সাথে (নামটা মনে না করতে পারায় দুঃখিত)। আলোচনা মূলত সাহিত্য নির্ভর এবং ওটাই হওয়ার কথা। বলে রাখা ভাল, ত্রিপুরার দুই কবি পীরগঞ্জ অবস্থানকালে আব্দুস সোবাহানের বাড়ীতেই অবস্থান করছিলেন। কথা ছিল সুশান্ত নন্দীর সাথে রাতে ব্র্যাক রেস্ট হাউসে আড্ডা হবে; আমি রংপুর চলে আসায় সেটি আর হলো না। পরে অবশ্য নন্দীর সাথে অনলাইনে কথা হয়েছে বেশ।


(২)
সন্ধ্যায় রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা। সরাসরি রফিক হাসনাইনের বাসায়। ততক্ষণে রাত নেমে এসেছে। হাসানাইন গিন্নী আমাদেরই অপেক্ষায় ছিলেন। সান্ধ্যকালীন আপ্যায়নে বিলম্ব হলো না। প্রথম দেখা তাঁর সাথে। অতি সহজেই আপন করে নিলেন। হাসনাইন ভাইয়ের দুটি মেয়ে। বড়টির সাথে আগে কথা হয়েছে। ওর লেখা শারদীয়া অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে ছাপা হয়েছে। ভালই লেখার হাত অনিন্দিতার। ফ্রেস হয়ে এবং ভাবীর আপ্যায়ন শেষে রংপুর নগরী দেখতে বের হলাম, এসই সাথে আগামীকালের বাস টিকেট কেনার উদ্দেশ্যও ছিলো।
প্রথমেই বাসের টিকেট সংগ্রহ করা হলো। এবার নিশ্চন্ত হয়ে শহর ঘুরে দেখা। যন্ত্রচালিত রিক্সা নেয়া হলো। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো চেনাতে লাগলেন হাসনাইন ভাই। স্বভাবসূভ ভঙ্গিতে বর্ণনা করে যাচ্ছেন তিনি। আমিও শুনছি। রংপুরে এসে কারমাইকেল কলেজ দেখা হবে না, এটা কেমন করে হয়। চলো- যেই কথা, সেই কাজ। আলো-আধারীতে রিক্সায় কারমাইকেল কলেজ দর্শন। তারপরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্চ আমার শিক্ষক। তাঁকে ফোন দিলাম। কথা হলো, কিন্তু ব্যস্ত থাকায় দেখা করার সময় দিতে পারলেন না। পরদিন সকালে দেখা করার কথা বললেন। আমার সময় না হওয়ায় তাঁর মতো গুনী ব্যক্তির সাথে এদফা দেখা হলো না।
রাত বাড়ছে, সাথে ভ্রমণের আনন্দটাও বাড়ছে। নগরীর রাস্তা ফাঁকা হতে শুরু করেছে। রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়ী শহর থেক তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দূরত্ব দু’জন স্কাউট নেতার কাছে কোনো বিষয় নয়। তাছাড়া ওই দিকটায় গেলে দেখা মিলতে পারে পেয়ারা ভাইয়ের সাথে। তাই রিক্সা বদল করে ছুটে চরা তাজহাট জমিদার বাড়ীর দিকে।
ইতাহাস ঘেঁটে জানা যায়, প্রাসাদটি বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায় নির্মাণ করেছিলেনএও জানা যায় মহারাজা গোপাল রায় পেশায় ছিলেন একজন স্বর্ণকারকথিত আছে, তার মনমুগ্ধকর তাজ বা মুকুটের কারণেই এ এলাকা তাজহাট নামে অভিহিত হয়ে আসছে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রাসাদটি ব্যবহৃত হয় রংপুর হাইকোর্ট বেঞ্চ হিসেবে ১৯৯৫ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ প্রাসাদটিকে একটি সংরক্ষিত স্থাপনা তথা স্থাপত্য হিসেবে ঘোষণা করেএ স্থাপস্ত্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবনে করে ২০০৫ সালে রংপুর জাদুঘরকে সরিয়ে এ প্রসাদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসে রাতের বেলা জমিদার বাড়ীর ভেতরে যাবার সুযোগ নেই, অগত্যা প্রথম দর্শনে তাজহাট জমিদার বাড়ীর বহিরাঙ্গণ দর্শনই হলো আমার প্রাপ্তি। জমিদার বাড়িটি এখন একটি জাদুঘর। 


অন্ধকার হাতরিয়ে আমরা এগিয়ে চললাম পেয়ারা বাইয়ের বাড়ির দিকে। পেয়ারা বাইয়ের পুরো নাম আনিসুল হক পেয়ারা, রংপুরের একজন আদর্ম শিক্ষক এবং স্কাউট লিডার। স্কাউটিং-এর সুবাদেই তাঁর সাথে পরিচয় ১৯৮০ সালে- মৌচাক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, পঞ্চম এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্কাউট জাম্বুরীতে। সেই থেকে ২০০০ সাল অব্দি যোগাযোগ ছিল। প্রায় দেড় যুগ ব্যবধানে যখন তার সামনে হাজির হরাম, তিনি কোনো কিছুই মনে করতে পারলেন না; অথবা মনে করতে চাইলেন না। পেয়ারা বাই খুব রসিক মানুষ ছিলেন, অন্তত আমি যতটুকু জেনেছি। রংপুরে স্কাউটিং বলতে একসময় পেয়ার ভাইকেই বোঝাতো। দীর্ঘ দিন রংপুর জেলা স্কাউটস-এর কমিশনার ছিলেন। আমার ভ্রমণসঙ্গী রফিক হাসনাইন পেয়ারা ভাইয়ের উত্তরসূরী হয়েছিলেন। স্বল্প সময়ের সাক্ষাৎ শেষে ফিরে চললাম। পেয়ারা ভাইয়ের স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়ায় খানিকটা খারাপ লাগলো বই কি!
শহরে ফিরে এসে দেখা হলো রংপুরের অতিপরিচিতজন রজনীতিবিদ মোজাফ্ফর হোসেন-এর সাথে। তিনি রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি। আগে জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। রফিক হাসনাইন আওয়ামী লীগের দুর্দান্ত কর্মী। আওয়ামী আইনজীবীদের নেতাও বটে। তবু প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতার সাথে তার চমৎকার সম্পর্ক ও হৃদ্যতা আমায় মুগ্ধ করেছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এমনটাই তো হওয়া উচিত- অথচ সর্বত্র এটা অনুপস্থিত; যা গণতন্ত্র বিকাশের মূল অন্তরায়। মোজাফ্ফর ভাই আপ্যায়িক করলেন একটা সম্ভ্রান্ত রেস্তোরাঁয়। অনেকক্ষণ আলাপচারিতা। রাজনীতি, অর্থনীতি- অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে রাত গভীর হয়ে গেল। অবশেষে বিদায় নেয়ার সময় তিনি বললেন, আবার রংপুর বেড়াতে এলে তার আতিথেয়তা গ্রহণ করি যেন। তার সাথে আলোচনা পর্ব মনে রাখার মতোই বটে।

চলবে






মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭

ধাবমান ঘূর্ণি অথবা একটা পায়রা

ধাবমান ঘূর্ণি অথবা একটা পায়রা



ছুটে চলে অবিরাম যাযাবর বিহঙ্গ
একাকী; যদিবা ডানার শ্বেত পালকে
কৃষ্ণ-বিবর তো আছেই

দলছুট হতে হয়; অবারিত সুযোগের মাঝেও
ক্লান্তি ছুঁতে পারে না ওকে
ছুঁটে চলে অবিরাম; কাল-বোশেখী
হেথায় নীরবে অশ্রু ঝরায়

বিস্তীর্ণ সবুজের কোলাহল তো রয়েছে
আছে নীলের অবারিত বিস্তার;
নেই বসন্তের পাগলা হাওয়া
তবু, ছুঁটে চলা অবিরাম

অবাক বিষ্ময়! ধাবমান পায়রার গতিতে
চমকিত! এ গতি কেন নেই আমার?
দলছুট যদিবা, কোথায় হারায় গতি
এমন গতির উস কি, কোথায়?

খুঁজে ফিরি আনমনে
একা; দূর দিগন্তে-
ওই শ্বেত পায়রার মতো

১৬ ১৮৫৩ এপ্রিল ২০১৭
ইস্টার্ন প্লাজা, ঢাকা

বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭

ভেসে চলা নিরন্তর

ভেসে চলা নিরন্ত

নুরুল্লাহ মাসুম


কালো দীঘল কেশ যখন চিরহরিৎ
শুভ্র সিঁথি হয় হালকা বাদামী
চিরল পাতাগুলো আমার সামনে
চির যৌবনা ললনা; প্রেরণার উৎস

ছুটে চলে অবিরাম সরল রেখায়
এতটাই মুগ্ধ, বুঝতে বিলম্ব হয়
ওর পথচলা আমার আমার বিপরীতে
মনটা ভেঙ্গে গেলেও- পুলকিত হই

উন্মুক্ত গগণে তাকিয়ে ব্যস্ত যখন
ভুলে যাই পথচলা; তাকিয়ে দেখি
পিঁচঢালা পথ নয়; চলমান জলরাশি
কম্পমান বিশালদেহী রাজহংসী আমার বাহন

ছুটেচলি অবিরাম- তুমি, আমি, আমরা
নানা বর্ণের নানা জাতের একঝাঁক পাখি
ক্ষণিকের রে মিলেমিশে একাকার
ছুটে চলি দুর্নিবার- অনন্ত চিত্তকর্ষক ছন্দে