নবম পর্ব
দেশের আম-জনতা
ক্রমান্বয়ে "কাঁঠাল-জনতা" হয়ে উঠতে পারে। কথাটা রসবোধ থেকেই বলছি, আম মিষ্টি বলে সকলেই সেটি খেতে পছন্দ করে। কাঁঠাল মিষ্টি হলেও এটির রয়েছে আঠালো স্বভাব। একবার ঠোঁটে (বিশেষত গোঁফে) লাগলে ছাড়ানো বেশ
কষ্টসাধ্য। আম-জনতাকে যতটা সহজে
ধুয়ে-মুছে ফেলা যায়, কাঁঠাল-জনতাকে ততটা
সহযে ধুয়ে-মুছে ফেলা যাবে কিনা তা রাজনৈতিক দলগুলোর ভাববার সময় এসেছে বলেই মনে হয়।
সংগত কারণেই
দেশের মানুষ দেশে দ্বিদলীয় শাসন ব্যবস্থার বিকল্প ভাবতে চাইছে- যদিও অদূর ভবিষ্যতে
তেমনটি হওয়ার কোন সম্ভাবনা বা লক্ষণ
দেখা যাচ্ছে না। ভুলে গেলে চলবে না, পাকিস্তান আন্দোলনের মূল শক্তি মুসলিম লীগের
আজ আর কোন অস্ত্মিত্ব নেই। বাংলাদেশের স্বাধীকার
আন্দোলনের মূল শক্তি আওয়ামী লীগকে বিষয়টি মনে রেখেই এগুতে হবে। আওয়ামী লীগে আজ মস্কোপন্থী সাবেক কম্যুনিস্টদের
সরব উপস্থিতি পক্ষান্তরে বিএনপিতে চীনপন্থী
কম্যুনিস্টদের সংখ্যাধিক্য রয়েছে। ব্যতিক্রম দীলিপ
বড়ুয়া;
যিনি চীনপন্থী হয়েও আওয়ামী লীগের
নেতৃত্বাধীন মহাজোটে শক্ত জায়গা করে নিয়েছেন শুরু থেকেই। অনেকে বলে থাকেন, আওয়ামী লীগে প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের তেমন কদর
নেই এখন আর। দাপটের সাথে এই দলে
বিরাজ করছে ব্যবসায়ীরা, যাদের রাজনৈতিক আদর্শ
বলে কিছু নেই।
ইচ্ছে ছিল দেশের
রাজনীতিকদের নিয়ে পর্যায়ক্রমিক আলোচনা করবো। প্রধান
বিরোধী দলের সাথে কোনও ধরণের সমঝোতা ছাড়াই নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশিত পথ ধরে
নির্বচনী তফসিল ঘোষণা করে দিল; যদিও
সরকার সমর্থকরাই এত অল্প সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণায় সন্তুষ্ট নয়। তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিরোধী জোটের টানা অবরোধের
নামে চল দেশব্যপী ধংসযজ্ঞ এবং মানুষ হত্যা। ঠিক
তে এমনি সময়ে নজরে এলা- লাটভিয়ায় একটি সুপারমার্কেট ধস বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে সে দেশের
প্রধানমন্ত্রী ভালদিস ডোওমব্রোওসকিস পদত্যাগ করেছেন। ফলে সে দেশের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটলো। গত বৃহস্পতিবার সুপারমার্কেট ধসের ঘটনায় অন্তত
৫৪ জন নিহত হয়েছিল। লাটভিয়ায়র প্রেসিডেন্ট
অপ্রন্দ্রস ব্যারজিনস এর সঙ্গে বৈঠককালে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ওই ট্র্যাজেডির রাজনৈতিক দায় কাঁধে নিয়ে আমি পদত্যাগ
করছি। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল
দিতে সক্ষম একটি সরকার এ মুহূর্তে লাটভিয়ার প্রয়োজন'।
লাটভিয়া সাবেক
সোভিয়েত ইউনিয়নভূক্ত একটি দেশ। দীর্ঘদিন তারা
সমাজতান্ত্রিক একনায়কত্ব দেখেছে- সহ্য করেছে স্ট্যালিনের কঠোর শাসন। গর্বচেভের গ্লস্তনস্ত ও প্রেস্ত্রেইকার সুবাদে
স্বাধীনতা লাভ করে নবীন গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী একটি ভবন ধসের কারণে পদত্যাগ
করেন- আমাদের রাজনীতিকদের কি শেখার মত কিছু আছে এটা দেখে?
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন