সৈকত নগরী
নুরুল্লাহ মাসুম
দৃশ্যকল্প-১
বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে ২০০ কিলোমিটার
নান্দনিক সৌন্দর্য্যরে এক অপরূপ সুন্দরী “কক্সবাজার সৈকত”। লক্ষ-কোটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুক্তা ছড়িয়ে
বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে - সাগর কন্যা ভালবাসার প্রগাঢ় আবেগে আছড়ে পড়ছে সেথায়। প্রেমের চিরন্তণী বাণী নিয়ে, কখনো সুবিশাল ঢেউ-তরঙ্গের
আকারে; কখনোবা
মৃদুমন্দ বাতাসে ক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি করে। প্যাসিফিকের
মত ঘণ-নীল-স্বচ্ছ জলরাশী না থাকলেও বঙ্গোপসাগরের বিচিত্র রূপের আধো-ঘোলা জলরাশির
সে ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা বিশালাকার তরঙ্গের মাথায় যে রাজটীকা জ্বল জ্বল করছে, তা বিশ্বের সবচেয়ে দামী
হীরক খে র থেকেও মহামূল্যবান।
দৃশ্যকল্প-২
বিশ্বের প্রাকৃতিক সেরা সাতটি স্থানের
আসন লাভের প্রতিযোগিতা থেকে ছিট্কে যাওয়ার পর সরকার বাহাদুর দেশের পর্যটন প্রিয়
মানুষ, প্রকৃতি
প্রেমী মানুষ আর অর্থনৈতিক বিষয়ে প্রকৃত জ্ঞানীদের নিয়ে এক মহাপরিকল্পনা তৈরীর
জন্য আয়োজন করে এক দীর্ঘ সেমিনার। মহাজ্ঞানীদের
মহাদীর্ঘ আলোচনায় সরকার আশ্বস্ত হন,
গৃহীত
হয় এক মহা পরিকল্পনা। দায়িত্ব
দেয়া হয় দেশের প্রখ্যাত নগরবিদদের। খুব
বেশী না হলেও একেবারে নাভিশ্বাস ওঠার মত কম সময় দেয়া হয়নি। দায়িত্ব পেয়ে নগরবিদরা কোমর বেঁধে লেগে
গেলেন দু’ শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সৈকতকে
মনের মত করে সাজাতে।
দৃশ্যকল্প-৩
মাত্র নয় মাসে নগরবিদরা জাতির সামনে
উপস্থাপন করলেন এক মহাযজ্ঞ,
উত্তর-পশ্চিম
থেকে দক্ষিন-পূর্বে বিস্তৃত দু’ শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সৈকত
থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার প্রস্থ এক অভিনব আধুনিক পর্যটন নগরীর পরিকল্পনা। সরকারের মহারথীরা দেখলেন। জনগণের মতামত নেয়ার জন্য সবগুলো দৈনিক ও
সাপ্তাহিকে প্রকাশ করা হল সে পরিল্পনার কথা। সকল
টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হতে লাগলো এ বিশাল পরিকল্পনার কথা। প্রতিটি চ্যানেল নিজ সাধ্যমত
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রচারের প্রতিযোগিতায় নেমে গেল। বেঁধে দেয়া সময় পার করে দেশের পর্যটন
মন্ত্রী দেশব্যাপী প্রচারের শেষ অংকে এক বক্তব্যে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল
বাঙালীকে জানালেন এ মহা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কথা; এর বাস্তবায়নে চাইলেন সকলের সহযোগিতা, বাস্তবায়নে সকলের প্রতি
বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন তিনি।
দৃশ্যকল্প-৪
নির্ধারিত সময়ের আগেই পর্যটন দফতর তাদের
প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে গেল দেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ থেকে। ১৫ কোটি জনতার দেশ বাংলাদেশ। দেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এগিয়ে এলো সারে চার কোটি বিনিয়োগকারী। সবচেয়ে বেশী করে সহায়তার হাত এগিয়ে দিল
দেশের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীগণ। প্রবাসী
বাঙালীরা রাখলেন দেশপ্রেমের জ্বলন্ত প্রমান।
পর্যটন দফতর ঘোষণা দিল, সারে চার বছরের মধ্যে
পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। তবে এক
বছরের মধ্যে নবনির্মিত আধুনিক পর্যটন নগরী “সৈকত নগরী”-র দু’ প্রান্তের নির্মান কাজ
সমাপ্ত হবে এবং পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হবে। এক কথায় বহু আকাংখিত সৈকত নগরী
প্রাথমিকভাবে আলোর মুখ দেখবে এক বছরের মধ্যে।
দৃশ্যকল্প-৫
এক বছর পরের কথা:
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে টেকনাফ
পর্যন্ত ১৮০ ফুট চওড়া, মসৃন, কালো পিচের ঝকঝকে রাস্তার
কাজ শেষ। পতেঙ্গা পয়েন্টে বাঙালীর ঐতিহ্য সমন্বিত
করে তৈরী করা হয়েছে সৈকত নগরীর প্রবেশ দ্বার। পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত তৈরী হয়েছে থীম
পার্ক, হোটেল-রোস্তোরা
কত কি! অবাক করা বিষয় হলো,
পর্যটকরা
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা পয়েন্ট থেকে যে কোন যানবাহনে ক·বাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেই সরাসরি চলে যাবেন সমুদ্রের
তলদেশে। না, ভয় পাবার কোন কারণ নেই! আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরী কালো পিচের
রাস্তাটি একটি ‘টানেল’-এ পরিণত হয়ে কর্ণফুলি নদীর
নিচ দিয়ে পথ অতিক্রম করেছে। দেশে এ
জাতীয় টানেল এটাই প্রথম। প্রথমে
ভয় লাগলেও টানেল অতিক্রম করার পর পর্যটকদের যে আনন্দানুভ‚তি আসবে, তা তাদের নিয়ে যাবে
কমপক্ষে আরো ৫০ কিলোমিটার পথ।
সৈকত নগরীর দীর্ঘ ২০০ কিলোমিটার পথের
প্রতি ২০ কিলোমিটার অন্তর রয়েছে বাস-বে। যাত্রীদের
ফ্রেস হবার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে,
রয়েছে
হালকা খাবারের ব্যবস্থা। যখন
পুরো নগরী তৈরী হবে, তখন
প্রতিটি স্থানেই থাকবে পর্যটনের সকল সুবিধাধি।
আপাতত, পর্যটকদের দেখার জন্য রাস্তার ডান দিকে অবারিত বালুকাময় সৈকততো
রইলোই। সাগর অবগাহনের জন্য রাখা হয়েছে আধুনিক
সুবিধাদিসহ সান-বাথ ও ওয়াটার রেইসিং এর ব্যবস্থা। লাল কাপড় পরিহিত উদ্ধারকর্মীদের দূর
থেকেই পরিস্কার দেখতে পাওয়া যায়।
দীর্ঘ এ পথ যাতে পর্যটকদের কাছে
নিরানন্দ না হয়, সে
জন্য বাস-বেগুলো আগেই তৈরী করা হয়েছে।
একেবারে শেষ প্রান্তে সকল নির্মান কাজ
শেষ। পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাতে টেকনাফ তৈরী
পুরোপুরিভাবে। সেখানে রাখা হয়েছে বিনোদনের নানান আয়োজন।
দৃশ্যকল্প-৬
৩ বছর পর:
সৈকত থেকে দেড় কিলোমিটার স্থলভাগ
পর্যন্ত বিস্তৃত নগরীর ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ । সীমানা
প্রাচীর করা হয়েছে পুরো দু’
শ’ কিলোমিটার জুড়ে। দশটি তোরণ নির্মান করা হয়েছে সে সীমান
প্রাচীরের দিকে। এতে করে পতেঙ্গা ছাড়াও অন্যান্য জায়গা
থেকে স্থানীয় জনগণ এ নগরীতে প্রবেশ করতে পারবেন।
কি আছে আমাদের এ আধুনিক সৈকত নগরীতে? বোধ করি প্রশ্নটা হওয়া
উচিত, কি নেই
এ নগরীতে? স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, সিনেমা হল, আধুনিক শপিং মল, খেলার মাঠ, থীম পার্ক, টয়-ট্রেন, রোপ-ওয়ে, কি নেই সেখানে বলুন তো? সারা দুনিয়ার মানুষের
বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের এ আধুনিক নগরীতে।
পুরো নগরটাই আধুনিক ফ্রি-পোর্ট এলাকা। পর্যটকরা বিনাশুল্কে কেনাকাটা করতে
পারবে। ইউরোপ- আমেরিকায় তারা যে ধরণের সুবিধাদি
পেয়ে থাকে, তার
সকল ব্যবস্থাই করা হয়েছে এখানে। অল্প
খরচে কেনইবা তারা এখানে আসবে না?
চট্টগ্রাম বিমান বন্দর আগে থেকেই আন্তর্জাতিক
মানের ছিল। ক·বাজার বিমান বন্দরকেও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়েছে। নগরীর
মাঝামঝি তৈরী করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের “সিটি টার্মিনাল”। যাত্রীরা যে কোন বিমান বন্দর থেকে
নগরীতে আসতে এবং নগর কেন্দ্র থেকে যে কোন বিমান বন্দরে সহজে যাতায়াত করতে পারেন
তাদের চাহিদা মত। কোথায় মেলে এমন সুযোগ!
দৃশ্যকল্প-৭
এ দৃশ্যকল্পটি সুখকর নয়:
চার বছরের বিশাল কর্মযজ্ঞে দেশের মানুষ
প্রাণঢালা সমর্থন জানালেও সরকারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে এক শ্রেণীর মানুষের
কুপমন্ডকতা - বাধা এসেছে হাজারো। ওরা
বলেছে ব্যাপক পর্যটন আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য মুছে ফেলবে। ঘরের মেয়েরা নাস্তায় নেমে যাবে, হারাম পানীয় ব্যাপক
ব্যবহারের ফলে দোজখের রাস্তা পরিস্কার হবে দেশের যুবসমাজের জন্য; ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি
হবে সমাজে। কর্মক্ষেত্রে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ
তথাকথিত সমাজপতিরা মেনে নিতে পারেনি। ফলে
সরকারকে কৌশলী হতে হয়েছে। অন্যান্য
মুসলিম দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের ধারা তুলে ধরতে হয়েছে সকলের সামনে। এগিয়ে এসছে দেশের মিডিয়াগুলো। ক্রমাগত ব্যাপক প্রচারের ফলে দেশের
আপামর জনসাধারণকে বোঝানো গেছে,
পর্যটন
দেশের সংষ্কৃতি ধংস করে না বরং আধুনিতার পরশ এনে দেয়, বাড়ায় জ্ঞানের পরিধি। মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে বিশ্বে টিকে
থাকার নতুন পথের সন্ধান দেবে এ নগরী। আঞ্চলিকতার
দোষে-দুষ্ট এক শ্রেনী চেয়েছিল এ বিশাল যজ্ঞে তারা প্রাধান্য বজায় রাখবে। ওরাও কাজের গতি কমিয়ে দেয়। আর চাঁদাবাজী ও দস্যুতার কথা! ওগুলোতো
আমাদের জীবনের স্বাভাবিক অংশ হয়ে ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। সকল সমস্যা কাটাতে সরকার যেমন কঠোর
হয়েছে, মিডিয়াগুলো
যেভাবে ধনাত্মক ভুমিকা নিয়েছে,
তেমনি
অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে দেশের সকল বিনিয়োগকারী, বিশেষত রিয়েল এস্টেট কোম্পানীগুলো। সকলের অদম্য সাহস ও ইচ্ছেশক্তির কাছে
দেশের কুপমন্ডুকতায় আচ্ছন্ন সমাজটাকে জয় করা গেছে শেষতক।
দৃশ্যকল্প-৮
প্রকৃতি যখন শত্রুর ভুমিকায়:
কক্সবাজারকে নিয়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে সরকার ও
উদ্যোক্তাদের কমপক্ষে তিনটে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হলেও সরকার তা কাটিয়ে
উঠেছে বিনিয়োগকারীদের সহায়তা দিয়ে। অর্থলগ্নীকারী
প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শর্তগুলো শিথীল করেছে। বাংলাদেশ
ব্যাংক এক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে অভিভাবকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। কিছু প্রচার মাধ্যমে এ উদ্যোগের বিরূপ
সমালোচনা হলেও বেশীরভাগ প্রচারমাধ্যম বিনিয়োগকারীদের পক্ষাবলম্বন করে সৈকত নগরীর
বাস্তবায়নে দারুনভাবে সহায়তা প্রদান করে। এজাতীয়
প্রাকৃতিক দূর্যোগ বারবার সামনে আসায় সরকার হতে পেরেছে সতর্ক। সৈকত নগরীকে ভবিষ্যত দূর্যোগের হাত
থেকে রক্ষা করার জন্য নগরবিদ ও আবহাওয়াবিদরা ব্যাপক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম হাতে
নিতে পেরেছেন। বিভিন্ন্ পয়েন্টে গড়ে তোলা হয়েছে
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সঠিকভাবে
আগাম সতর্কবানী দেয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে উন্নত। সৈকত নগরীর প্রধান সড়ক ছাড়াও প্রতিটি
ফিডার রোডে বড় বড় ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়ার ব্যবস্থা করা
হয়েছে। চালু হয়েছে একাধিক এফ.এম. রেডিও - বিপদ
ঘনিয়ে আসার আগেই পর্যটকদের সাবধানবানী জানিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুজে নিতে সহায়তা দিতে। সমুদ্রে যারা অবগাহন করবেন তাদের জন্য
অতিরিক্ত লাইফগার্ডের ব্যবস্থা সুনিশ্চিচত
করা হয়েছে। এরপরও যে কোন ধরণের অনাকাংখিত ঘটনা
মোকাবেলায় গঠন করা হয়েছে ‘সৈকত
নগরী বিধান সভা’-যেখানে
রয়েছ সকল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং তাদের তত্বাবধানে রাখা হয়েছে
বিশেষ ‘শৃংখলা
রক্ষাকারী স্বেচ্ছাসেবক দল”।
দৃশ্যকল্প-৯
মেঘের আড়ালে সূর্য হাসে:
সকল বাধা অতিক্রম করে অবশেষে দেশের ‘সরকার প্রধান’ আড়ম্বরের সাথে ‘সৈকত নগরী’র উদ্বোধন করলেন শীতের এক
পড়ন্ত বিকেলে। সেখানে আপামর জনগণের সাথে একই কাতারে
হাজির হয়েছিলেন জ্ঞানীজন,
বিদেশী
হাজারো অতিথি, পর্যটক
এবং অসংখ্য মিডিয়া কর্মী। দেশের
সকল টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতার অর্ভতপূর্ব সে অনুষ্ঠান সরাসারি স¤প্রচার করে। বিশ্বজুড়ে লাখো-কোটি দর্শক-শ্রোতা দেশের
মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সংক্ষিপ্ত আয়োজনটি হয়ে ওঠে ইতিহাস
সৃষ্টিকারী একটি অনুষ্ঠানে। উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে ‘সরকার
প্রধান’ আশা
প্রকাশ করেন, ক·বাজার দেশের প্রবেশদ্বার
হিসেবে বিশ্ব-দরবারে খুব শীঘ্রই ব্যাপক পরিচিতি লাভ করবে এবং দেশকে উন্নত বিশ্বের
কাতারে নিয়ে যেতে দ্রুত অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আয়োজনের শেষ পর্যায়ে তিনি সৈকত নগরীর
প্রবেশদ্বারের সুইচ ‘অন’ করে সকলের জন্য উন্মুক্ত
করে দেন। শুরু হয় ‘সৈকত নগরী’র আনুষ্ঠানিক
যাত্রা।
দৃশ্যকল্প-১০
‘সৈকত নগরী’তে
রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, নোয়াখালী এবং যশোর থেকে
আগত কয়েকজন স্থানীয় পর্যটকের আলোচনা শুনে আসি, চলুন-
- ও মনু, মুই কি এহন বাংলাদেশে না আমেরিকায়?
- কিতা কন বা? আফ্নে বাংলাদশত-ই আছ। তয়
ফ্রি ফোর্টত। ইতার লাগি আফনের কাছে আমরিকা লাগতাছে।
- যাই-ই বলুন ভাই, এ সৈকত নগরী আমাদের গর্বের
নগরী। কি, ঠিক বলেছি না?
- তোমরা অত অঙ্গের (রঙের) কতা কইয়েন না। মোর অহন মনে অয় মোরা কি হনুরে বাবা!
- ছাব্বাস সরকার বাহাদুর। মামুর বেটা ছারে-চার বছরে কি খেইল
দেখালুরে!
- আঁনহেরা যাই কইন না, আঁই ইহানে একখানা ফিলাট্
কিনতাম ছাই। কোনাই যাওন লাগবো, কইন ছাই দেহি।
এটা কোন দৃশ্য কল্প নয়।
দৃশ্য - ১
এতক্ষণ যে দৃশ্য কল্পগুলো দেখলাম, সেগুলি বাস্তবে রূপ দেয়া
সম্ভব, যদি
আমাদের জনগণের কর্মচারীগণ সত্যিকার অর্থে অনুধাবন করতে সক্ষম হন যে, তারা জনগণের অর্থে বিলাশ
বহুল ভবনে ততধিক বিলাশ বহুল জীবন যাপন করছেন এবং সে সকল সাধারণ পাবলিকের জন্য কিছু
একটা করা দরকার, নইলে
আয়টা হালাল হবে না; তবেই
এমন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
এ জন্য সবার আগে দরকার জনপ্রশাসনের
কর্মচারীদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন। জনগণের
ট্যাক্সের
টাকায় যারা দেশের “জেলা
প্রশাসক” হয়ে
বসে আছেন তারা যদি “জেলার
সেবক” না হতে
পারেন তবে আমাদের মহা পরিকল্পনার “পরি” উড়ে যাবে, থাকবে কেবলি “কল্পনা”। আমরা তা চাই না।
আমরা সরকারের সাথে ব্যক্তি উদ্যোগের সমন্বয় ঘটিয়ে ‘বিশ্বের দীর্ঘতম অখন্ড
বালুকাময় সৈতক’ সম্বৃদ্ধ নগরী ক·বাজারকে ‘বিশ্বখ্যাত
পর্যটন নগরী’ হিসেবে
গড়ে তুলতে চাই। বিশ্বের বুকে ‘দরিদ্র’ দেশের তালিকা থেকে
বাংলাদেশের নাম মুছে ফেলতে চাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন